• 22 Dec, 2024

আনোয়ারা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

আনোয়ারা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

আনোয়ারা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

আনোয়ারা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস উদযাপন উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে উপজেলা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ। পরে দুপুরে প্রেস ক্লাবের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল নুর চৌধুরীর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, মহান একুশ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। মহান একুশ আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার জন্য। একুশ বাঙালির স্বাধীনতা চেতনার প্রথম স্তম্ভ। সেদিন যারা ভাষা আন্দোলনের জন্য শহীদ হয়েছিলো তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। সেই সাথে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যার জন্ম না হলে এই বাংলার জন্ম হতোনা এই মহান নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। ১৫ আগষ্ট যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। মহান একুশ আমাদেরকে যে শিক্ষা দিয়েছেন সে শিক্ষাই অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।


মাদক ব্যবসায়ীদেরকে উদ্দ্যেশে করে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, যারা মাদক এবং ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত আছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে কারণ তারা কোন মানুষ নয়। তারা হলো সমাজের কীট। তারা জারজ সন্তান। তাদেরকে চিহ্নিত করে যদি আমরা ব্যবস্থা নিতে না পারি তাহলে আগামীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই সোনার বাংলা আমার মহান নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া কখনো সম্ভব হবেনা।
আনোয়ারা- কর্ণফুলির উন্নয়ন তুলে ধরে তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, আমার রাজনৈতিক অভিভাবক সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ অত্যন্ত পরিশ্রম করে আনোয়ারা-কর্ণফুলিকে উন্নয়নের দিকে ধাবিত করেছেন। ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করা হবে। চায়না ইকোনোমিক জুনের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের এখানে কাফকো, সিইউএফএলের মতো বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি তাহলে আনোয়ারা হবে বাংলাদেশের মধ্যে একটি আদর্শ উপজেলা।
সাংবাদিকদের জাতির বিবেক উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, দেশ থেকে মাদক, অপরাধ, দুর্নীতি বন্ধ করতে সৎ সাংবাদিকতার বিকল্প নেই। আনোয়ারাকে মাদকচক্র থেকে মুক্ত করতে আনোয়ারা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের প্রতি আপোষহীন ভূমিকা রাখার জন্যও তিনি উদাত্ব আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে আবদুল নুর চৌধুরী বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি এদেশ স্বাধীনতার উৎপত্তি। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদেরকে নিজের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার জন্য শিক্ষা দেয়। ১৯৪৮ সালে যখন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করা হবে বলে ঘোষণা দিল তখন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করেছিল। ১৯৫২ সালে যখন আবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন বাংলা ভাষাকে পদদলিত করে উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার ঘোষণা দিল তখন সালাম, রফিক, শফিক, জব্বারসহ এদেশের আপামর জনসাধারণ ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের দীর্ঘ রক্তের বিনিময়ে একুশে ফেব্রুয়ারি অর্জিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। একুশ আমাদেরকে শিক্ষা দেয় অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার জন্য, নিজের অধিকার আদায় করার জন্য, গণমানুষের অধিকার আদায় করার জন্য সংগ্রাম করার শিক্ষা দেয়। কিন্তু প্রতিবছর আমরা শুধু একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করলে হবে না, মাতৃভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য, এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা করার জন্য মানুষ মানুষের জন্য প্রত্যেকে আমরা পরের তরে এ থিউরী মনে রেখে মানবাধিকার যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে আমাদের জীবন সার্থক হবে অন্যাথায় একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করে কোন লাভ হবে না।
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম সালাউদ্দিনের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মোঃ বদরুল হক, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমরানুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক নাবিদ, অর্থ সম্পাদক ওসমান গণি, অফিস ও দপ্তর সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম, পাঠাগার সম্পাদক রিয়াদ হোসেন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক জাহিদ হাসান হৃদয়, নির্বাহী সদস্য কে এম হাছান, আরমান হোসেন, শেখ আব্দুল্লাহ, মোঃ জামশেদ, মোঃ আলবীন প্রমুখ।